রাতের আধাঁরে বিষ্ফোরণে কেঁপে উঠল ঢাকার মগবাজার। বিষ্ফোরণের এই ঘটনায় কমপক্ষে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি, সেখানে অবিস্থিত শর্মা হাউজ থেকেই মূলত বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেখানে সম্ভবত জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণের কারণে আশেপাশের সাতটি বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পথে থাকা দুটি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সাতজন মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি।’
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মগবাজার ওয়ারলেস গেটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। বিষ্ফোরণের কারণে একটি তিনতলা বাড়ি ধসে পড়েছে। আশপাশের বাড়ির কাঁচও ভেঙে গিয়েছে এবং রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসও ক্ষতিগস্ত হয়েছে।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিস পৌঁছে দ্রুত উদ্ধারকাজশুরু করে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে ভরতি আছেন। সবমিলিয়ে সেখানে ৪১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাবি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও পরে জানা যায়, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুটি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। আহত অবস্থায় অনেকেই ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ শঙ্কর পাল।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদেরকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। বাকিদেরকে জেনারেল ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, এ সব রোগীদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের ক্যাজুয়ালটি ইনজুরি রয়েছে।
অন্যদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, আমাদের এখানে এ পর্যন্ত ৩৯ জন রোগী পেয়েছি। এর মধ্যে রাত সোয়া ১০ টার সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জান্নাত (২৩) নামে এক নারী মারা গেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে আসা বেশিরভাগ রোগীই ছিল হাত-পা ভাঙা আহত রোগী। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের শরীরের পোড়া ছিল। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বার্ন ইউনিটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ইতিমধ্যে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। রাত এগারোটা পর্যন্ত আমাদের এখানে দু’জনকে ভর্তি করা হয়। পরে অবজারভেশন থেকে আরও কয়েক জনকে ভর্তি করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে নেওয়ার পর ২ জনের মৃত্যু ঘটেছে। নিহতের মধ্যে একজন শিশু অন্য একজন বয়স্ক। শিশুটির মৃতদেহ তার পরিবার নিয়ে গেছে এবং বয়স্ক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে কমিউনিটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয় এবং সেখান থেকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।