Saturday, December 2, 2023
শিক্ষামূলক আমাদের লোকশিল্প ও নকশিকাঁথা

আমাদের লোকশিল্প ও নকশিকাঁথা

-

 

নকশিকাঁথা

আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নকশিকাঁথা। এক একটি নকশিকাঁথা যেনো আমাদের গ্রাম্য মহিলাদের জীবনের আত্মকাহিনী। এ যেন লোকায়ত শিল্পদর্শনের মূর্তপ্রতীক। কাঁথা অতি সাধারণ উপাদানে তৈরি এ দেশের কারুশিল্পীদের অনবদ্য সৃষ্টি। অনুপম শিল্পমাধুর্যের বাস্তব রূপ নকশিকাঁথা। কাঁথার সঙ্গে আমরা সবাই কম-বেশি পরিচিত। এ দেশের বিরাট জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ব্যবহূত উত্পাদিত শিল্পপণ্যের মাঝে নকশিকাঁথা অন্যতম। আমাদের দেশে এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কাঁথার ব্যবহার নেই। কাঁথা শব্দের অভিধানিক অর্থ ‘জীর্ণ বস্ত্রে প্রস্তুত শোয়ার সময়ে গায়ে দেয়ার মোটা শীতবস্ত্রবিশেষ’। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি কাঁথা, কেতা, কাতা এবং খেতা নামেও পরিচিত। সুনিপুণ হাতে সুঁই আর সুতায় গ্রামবাংলার বধূ-কন্যাদের মনের মাধুরী মেশানো রঙ দিয়ে নান্দনিক রূপ-রস ও বর্ণ-বৈচিত্র্যে ভরা যে কাঁথা, তাই নকশিকাঁথা। নকশিকাঁথায় আমরা প্রতিনিয়ত খুঁজে পাই আমাদের শিল্প, সংস্কৃতি, সমাজ-সভ্যতা, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য, গৌরবগাথা ও সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। নকশিকাঁথায় এ দেশের গ্রামীণ নারীদের লোকায়ত ভাবনা, আবেগ আর কল্পনার আরেক রূপ যেন সূচিকর্মের মাঝ দিয়ে মূর্ত প্রকাশ ঘটছে। গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির প্রবাহিত ধারায় তাইতো দেখা যায় নানা নকশাসমৃদ্ধ নকশিকাঁথা এবং কাঁথা নকশা অঙ্কিত বহুবিধ পণ্য। এটি মূলত গ্রামীণ মহিলাদের শিল্পকর্ম হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। নকশিকাঁথা শিল্পের সঙ্গে আমাদের আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডও জড়িয়ে আছে নিবিড়ভাবে।

নকশিকাঁথা নিয়ে লেখা হয়েছে কাব্য, গাথা ও রচনা। এ দেশের প্রথম মহিলা কবি চন্দ্রাবতী। তিনি তার রামায়ণ কাব্যে সীতার অন্যান্য গুণের সঙ্গে কাঁথা সেলাইয়ের কথা বলেছেন এভাবে, ‘সীতার গুণের কথা কি কহিব আর, কন্থায় আঁকিল কন্যা চান সুরুজ পাহাড়। আরও যে, আঁকিল কন্যা হাসা আর হাসি। চাইরো পাড়ে আঁকে কইন্যা পুষ্প রাশি রাশি’। পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের অনবদ্য কাব্যগ্রন্থ ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ও এরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পল্লী রমনীদের শিল্পীমনের এক অপূর্ব অভিব্যক্তি যেন নকশিকাঁথা। বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের আস্তরণের ওপর সুঁই আর সুতায় একে একে ফুটে উঠে আম, মাছ, খেজুর গাছ, পাখি, পালকি, লাঙ্গল, নৌকা, হাতি, ফুল, লতাপাতা, ঘোড়া, চাঁদ, তারা, রাজ-রাজার জীবনকাহিনী, কল্পনার পরী, যুদ্ধ-বিগ্রহ, নর-নারীর প্রেম-ভালোবাসা এবং একই সঙ্গে গ্রামীণ জীবনের আরো অনেক কিছু। এ যেন শিল্পীর কাছে অতিপরিচিত পরিবেশ ও প্রকৃতির নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ। নকশিকাঁথা নিয়ে বহু গানও লেখা হয়েছে।
এ দেশের গ্রামের বধূ ও কন্যারা একসময় শুধু পরিবারের প্রয়োজনে নকশিকাঁথা তৈরি করত। আর এরই মাঝ দিয়ে আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের প্রকাশ পেত। সাধারণত বর্ষাকালে গ্রামের মহিলাদের সংসারের কাজকর্ম কম থাকায় সে সময়ে কাঁথা তৈরি করত। বলতে গেলে গ্রামীণ জীবনে এ ধারা আজো অব্যাহত আছে। আমাদের দেশের প্রায় সর্বত্রই নকশিকাঁথা তৈরি হতো। প্রধানত. বাংলাদেশের রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, পাবনা, দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, যশোর, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলে তৈরি হতো এসব কাঁথা। বিভিন্ন অঞ্চলে ফোঁড়, পাইড় ও নকশা অনুযায়ী নকশিকাঁথা ভিন্ন ভিন্ন নামেও পরিচিত। এগুলো হলো: বরকা ফোঁড়, তেসবি ফোঁড়, বাঁশপাতা ফোঁড়, কইতা ও বিছা ফোঁড় প্রভৃতি। পাড়ের নামে তোলো পাইড়, তাস পাইড়, নয়নলতা, নারকেল পাতা ও নৌকাবিলাস আরো বহু নামের নকশিকাঁথা রয়েছে।
একসময় বিভিন্ন অঞ্চলের নকশিকাঁথাগুলো কারুশিল্পীদের নিজস্ব সৃজনশীলতায় পূর্ণ থাকত। কাঁথা শিল্পীরা সুঁই-সুতা দিয়ে আপন মনের লালিত কল্পনায় চারপাশের পরিবেশ, প্রকৃতি, প্রাণী, পাখি ও দৈনন্দিন ব্যবহূত পণ্যসামগ্রী কাঁথায় প্রতিফলিত করেছেন। এ যেন রূপকার ও পরিবারের একত্র শিল্পকর্ম। তখন কাঁথার জমিনে কারুকাজ করার পূর্বে কোনো নকশা এঁকে নেয়ার প্রয়োজন হতো না। শিল্পী নিজের মতো করে যে কাপড়ে যে রঙের সুতার ব্যবহার প্রয়োজন, তাই করেছেন। এঁকেছেন নানা প্রকার নকশা। সুনিপুণ হাতে মেধা ও মননের শৈল্পিক প্রকাশ নকশিকাঁথা। এটাই যেন এর নিজস্বতা। কোনো নকশার সঙ্গে কোনো নকশার মিল নেই। কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না অভিন্নতা। পুরনো দিনের নকশিকাঁথা আজো তৈরি হচ্ছে, তবে তা সীমিত পরিসরে। কিন্তু এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, নকশিকাঁথা আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। একসময় নকশিকাঁথা দেশের নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ নিজস্ব প্রয়োজনে তৈরি করলেও পরবর্তীতে এর ব্যবহার ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কারুকাজের জন্য বলতে গেলে সর্বস্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় পণ্য হয়ে উঠে। বর্তমানে নকশিকাঁথা শুধু নিম্নমধ্যবিত্তের কাছে নয়, পৃথিবীব্যাপী এর চাহিদা ও সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে। এই ঐতিহ্যবাহী সূচিকর্মের প্রতি নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতাও প্রসারিত হচ্ছে। অন্যদিকে এ পণ্যের বাণিজ্যিক গুরুত্বও ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি গ্রামবাংলার নারীদের আয়-উপার্জন বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এখন প্রচুর পরিমাণ নকশিকাঁথা তৈরি হয়ে থাকে।
আবহমানকাল ধরে এ দেশের মানুষ নকশিকাঁথা ব্যবহার করে আসছে। শহরে কিংবা গ্রামে আজো কাঁথার যথেষ্ট কদর রয়েছে। তবে আগেকার দিনে প্রতিটি পরিবারে নকশিকাঁথার ব্যবহার ছিল ব্যাপক ও বহুবিধ। ব্যবহার অনুযায়ী এগুলোর নামেও ছিল ভিন্নতা। যেমন: শীতের জন্য লেপ কাঁথা, বালিশে ব্যবহারের জন্য বয়তন, নামাজের জন্য জায়নামাজ কাঁথা, বসার জন্য আসন কাঁথা, আয়না চিরতনি রাখার জন্য আর্শিলতা, পান-সুপারি রাখার জন্য পান কাঁথা, মূল্যবান জিনিসপত্র ও কাপড় বেঁধে রাখার জন্য বোচা কাঁথা, কোরআন শরীফ রাখার জন্য গিলাফ কাঁথা এবং খাবারের জন্য দস্তরখানসহ কাঁথার ব্যবহার অনুযায়ী আরো অনেক নাম ছিল। মেয়েদের বিয়েতে এবং আত্মীয়স্বজনকে কাঁথা উপহার দেয়ারও প্রচলন ছিল। স্নেহময়ী মা তার সন্তান, প্রেমময়ী স্ত্রী তার স্বামীর জন্য এবং নানি-দাদী, খালা-ফুফুরা পৃথিবীতে নতুন অতিথির আগমনকে সামনে রেখেও কাঁথা তৈরি করতেন। এ প্রচলন আজো ফুরিয়ে যায়নি। এখন নকশিকাঁথার বহুবিধ ব্যবহার দেখা যায়। নকশিকাঁথার ডিজাইনে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ওড়না, পাঞ্জাবি, বেড কভার, কুশন কভার, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী তৈরি হচ্ছে। তবে এসব নকশিকাঁথার মধ্যে আদি ভাবটি আজকাল তেমন দেখা যাচ্ছে না। এসব কাঁথা তৈরি হচ্ছে নতুন কাপড়ে এবং পুরনো দিনের পাড়ের সুতার পরিবর্তে নতুন রঙিন সেলাই সুতা দিয়ে। প্রথমে নকশা এঁকে নিয়ে পরে কাঁথা সেলাই করা হচ্ছে। পুরনো দিনে এমনটা দেখা যায়নি। তখন হস্তশিল্পীরা সুঁই-সুতার মাধ্যমে কাঁথা জমিনে মনের মাধুরী মিশিয়ে নানা রকম নকশা এঁকে তৈরি করতেন সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন নকশিকাঁথা। বর্তমানে কাঁথা তৈরিতে পূর্বের কাঁচামাল ব্যবহূত না হলেও নকশার অনুকরণ ব্যাপকভাবে দেখা যায়। পুরনো দিনে প্রথমে নকশা করে কাঁথা সেলাই না করার কারণে প্রতিটি কাঁথার আলাদা আলাদা রূপ ছিল, ভিন্নতা ছিল। এখন একই নকশা করা কাঁথা অনেক তৈরি হচ্ছে। এসব কাঁথার চাহিদাও রয়েছে দেশে-বিদেশে প্রচুর।
সেকালের নকশিকাঁথা আজো আছে এবং তৈরিও হচ্ছে। তবে বিবর্তনের ধারায় সময় ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকর্মেও লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। নকশিকাঁথার চাহিদা এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এসেছে ব্যাপকতা ও নতুনত্ব। দেশের সীমানা পেরিয়ে এটি আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমাদৃত হচ্ছে। শৌখিন পণ্য হিসেবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে নকশিকাঁথা। পুরাতন কাপড় ও সুতার পরিবর্তে ব্যবহূত হচ্ছে নতুন মার্কিন লালসালু কিংবা সাদা-কালো ও রঙিন কাপড় এবং বিদেশী সিল্কি পেটি সুতা। নকশার ক্ষেত্রেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। মানুষের রুচি বদলের ফলে পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে এসেছে যথেষ্ট নতুনত্ব। আজকাল কুশনের কভার, টেবিলম্যাট, ওয়্যারম্যাট, বেডকভার, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, পোশাক ও বহুবিধ শৌখিন পণ্যসামগ্রী তৈরিতেও নকশিকাঁথা ব্যবহূত হচ্ছে। এতে করে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এ শিল্পপণ্যের চাহিদা। এটা আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে একটি সুখবর।
বিসিক দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতের উন্নয়ন ও প্রসারে কাজ করছে। আধুনিক ও সময়োপযোগী নকশা সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা প্রদান, উত্পাদন বৃদ্ধি ও পণ্য বিপণন, প্রশিক্ষণসহ আমাদের ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথার মান উন্নয়নে বিসিক কাজ করছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা ও বিদেশে আয়োজিত মেলায় নকশিকাঁথার বিপণনে সহায়তা করছে। তাছাড়া বিসিক নকশিকাঁথা কারুশিল্পীদের উত্পাদিত পণ্যসামগ্রীর ব্যাপক পরিচিতি, বাজার সম্প্রসারণ এবং দেশী-বিদেশী ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ঢাকায় একক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও বর্তমানে কাজ করছে। তবে এ শিল্পের উন্নয়নের স্বার্থে সহায়তার পরিধি আরো ব্যাপক হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
নকশিকাঁথা আমাদের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্ম। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে উত্পাদন, আয় বৃদ্ধির ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে এ খাতের রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। তবে এ শিল্প খাতকে আরো বিকশিত করার জন্য এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারুশিল্পীদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া একান্ত প্রয়োজন। এজন্য বিসিকসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরো আন্তরিকতার মনোভাব নিয়ে সহায়ক শক্তি হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে। প্রসারিত করতে হবে এ খাতের বিকাশের জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা। কারণ নকশিকাঁথা শুধু আমাদের ঐতিহ্য কিংবা ঐতিহ্যের বাহনই নয়। এ শিল্পে দেশের বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। দেশীয় বাজার ছাড়াও রফতানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সুযোগ ও সম্ভাবনাকে দক্ষতার সঙ্গে আমাদেরকে কাজে লাগাতে হবে।
👽লাইক, কমেন্ট, শেয়ার ও সাবস্ক্রাইব করতে ভুলা যাবে না  কিন্তু…..😉😈

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest news

What Is a Virtual Info Room?

A electronic data space (VDR) is mostly a secure on the web repository for the purpose of sharing...

Benefits of Board Room Software

A plank room applications are a digital meeting space that enables you to operate together...

Management Software is an important Tool for the purpose of Sensitive Govt Files

Government agencies are often times overwhelmed by sheer amount of conventional paper they handle, from applications to accounts...

Can be 360 Secureness Legit?

The answer to the problem “is fish hunter 360 security legit” is yes, although it’s...

How to Protect the Personal Data That’s Most Important to you personally

Every day, all of us create a digital footprint by simply sharing information concerning social media, filling out...

Asus Gaming Notebook computers

If you're in the market for a games laptop, there are plenty of excellent alternatives out there. The...

Must read

What Is a Virtual Info Room?

A electronic data space (VDR) is mostly a...

Benefits of Board Room Software

A plank room applications are a digital meeting...

লেখা আহবান

বহুল প্রচলিত মাসিক পত্রিকায় আপনার লেখা জমা দিন

পছন্দনীয় আরোও খবর: